চুনখোলা গ্রামে ১৫ শতকে নির্মিত এই মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী খান জাহান আলী নির্মিত অন্যান্য স্থাপত্যশৈলী থেকে ভিন্ন। ৭.৭ বর্গমিটার চৌকোণা দালানের দেয়ালগুলো ২.২৪ মিটার করে পুরু। মসজিদটির পূর্বদিকে ৩টি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে প্রবেশদ্বার রয়েছে। এতে তিনটি মিহরাব রয়েছে যার মধ্যে কেন্দ্রীয় মিহরাবটি সবচেয়ে বড়। মসজিদে একটি অর্ধগম্বুজ আছে। ইটের দেয়ালসমূহ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে ১৯৮০ সালে ইউনেস্কোর সহায়তায় সংস্কার করা হয়।
ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে ধান খেতের মধ্যে চুনাখোলা গ্রামে (এককালে প্রচুর চুনাপাথরের নির্যাস পাওয়া যেত বলে এই নাম হয়েছে) চুনখোলা মসজিদটি(Chunakhola Masjid) অবস্থিত, ১৫ শতাব্দীতে নির্মিত। মসজিদিটির স্থাপত্যশৌল খান জাহান আলীর স্থাপত্যশৌল থেকে ভিন্নতার প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃত। র্বগাকৃতির এ মসজিদটির বাইরের দিক লম্বায় প্রায় ৪০ ফুট এবং ভেতরের দিক ২৫ ফুট। দেয়ালগুলো প্রায় ৭-৮ ফুট চওড়া। মসজিদিটির পূর্বদিকে ৩টি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে প্রবেশদ্বার রয়েছে । এতে তনটি ধনুকাকৃতির মিহরাব রয়েছে যার মধ্যে মাঝের মিহরাবটি অপেক্ষাকৃত বড়। প্রতিটি মিহরাবের গায়ে রয়েছে নানারকম ফুল ও লতাপাতার কারুকাজ। আয়তাকার কেন্দ্রীয় মিহরাবটি চিরাচরিত নয়মে দেয়ালের বাইরে সম্প্রসারিত এবং তা ছাদ পর্যন্ত উঁচু। সম্পুর্ণ ছাদ জুড়ে অর্ধগোলাকৃতির বিশাল গম্বুজটি ভেতরের দিকে স্কুইঞ্চের উপর স্থাপিত। মসজিদের বাইরের চার কোণের চারটি মিনার খান জাহানী রীতি অনুযায়ী গোলাকার এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে ঢালাই করা ব্যান্ড দ্বারা বিভক্ত। ইমারতের তিনটি র্কানিশ চিরাচরিত বাংলার স্থাপত্যরীতি অনুযায়ী বাঁকানো। মিহরাবগুলোর নিচের অংশ মাটির ভেতরে কিছুটা দেবে গেছে। অলঙ্করণের ক্ষেত্রে জালির কাজ, ফুল ও লতাপাতার ডিজাইন, যুক্ত বৃত্ত, বিষমকোণী চর্তুভুজ এবং প্রচলিত ঝুলন্ত মোটিফ স্থান পেয়েছে । বর্তমানে এ অলঙ্করণগুলি শুধু মিহরাবের কুলুঙ্গিতে, খিলানের উপরে এবং বাঁকানো র্কানিশে লক্ষ করা যায়। স্থানীয় জনশ্রুতি মতে, মসজিদটি খান জাহানের কোনো কর্মচারী নির্মাণ করেছিলেন। চুনাখোল মসজিদে এখনো নিয়মিত নামাজ আদায় করা হয়।
কোথায় থাকবেনঃ
বাগেরহাট সদরে বিভিন্ন হোটেল আছে । এছাড়াও সরকারি গেস্টহাউস আছে।
খুলনা থেকে বাগেরহাটে আসতে সময় ১ ঘণ্টা লাগার কারনে খুলনাতেও থাকা যায়।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকার সায়দাবাদ থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এবং সন্ধা ৭ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত অনেকগুলা গাড়ী ছেড়ে যায় |
আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে খুলনা গিয়ে এরপর বাস ধরে বাগেরহাটে যেতে পারেন। রূপসা থেকে বাগেরহাটে যেতে প্রায় ৪০ মিনিট লাগে।
বাসস্ট্যান্ড থেকে ষাট গম্বুজ মসজিদ সাত কিলোমিটার এবং খানজাহান আলীর (রহ.) সমাধিসৌধ থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে পশ্চিমে ষাট গম্বুজ মসজিদ চত্বর। রিকশাভাড়া ৩০ টাকা। ষাটগম্বুজ মসজিদের উত্তর-পশ্চিম দিকেরে পথ ধরে ঘোড়া দিঘির পাস দিয়ে সোজা পশ্চিমের পথে যেতে হাতের বামে চোখে পড়বে বিবি বেগনী মসজিদ। আরেকটু ভিতরে গেলে চুনাখোলা মসজিদ দেখতে পাওয়া যায়।